আজ শুরুতেই আপনাদের নিয়ে যেতে চাই কুমিল্লার বিখ্যাত 'শালবন বিহার' এ। শালবন বিহার সম্পর্কে কিছু ভূমিকা দিয়ে নিচ্ছি।
কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ থেকে কিছুদূর এগোলেই রাস্তার বামপাশে খোলা প্রান্তরে দেখা মিলবে ধ্বংস-প্রায় শালবন বিহারের। পূর্বে এই প্রত্নস্থানটি শালবন রাজারবাড়ি নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে খনন এর পর ১১৫টি ভিক্ষুকক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি পাশ ৫৫০ ফুট দীর্ঘ একটি বৌদ্ধ বিহার উন্মোচিত হয়। তাই একে শালবন বিহার নামে অভিহিত করা হয়।
বিহারটির মধ্যভাগে একটি মন্দির এবং উত্তর বাহুর মাঝামাঝি স্থানে প্রবেশ তোরণ এর বিশেষ আকর্ষণ। বিহারটিতে ৪টি ও কেন্দ্রীয় মন্দিরে ৬টি নির্মাণ যুগের প্রমান পাওয়া গেছে। খননে প্রাপ্ত একটি পোড়ামাটির মূদ্রক থেকে জানা যায়, এই বিহারটি দেব বংশের চতুর্থ রাজা ভবদেব খ্রিষ্টীয় আট শতকে নির্মাণ করেছেন। তার অর্থ এই যে, এর আসল নাম ছিল 'ভবদেব মহাবিহার'
কুমিল্লার পথে
ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত সড়ক পথের দূরত্ব মাত্র ২:৩০ মিনিটের(জ্যাম না থাকলে)। যেখানে ঢাকার কমলাপুর থেকে উত্তরা যেতে লাগে ৪ ঘন্টা!
বাস সার্ভিসের দিক থেকে তিশা এবং এশিয়া লাইন এগিয়ে। যেকোন একটিতে চড়েই যেতে পারেন কুমিল্লার পথে। যারা চট্টগ্রাম থেকে আসতে চান তাদের জন্য আমার মতে প্রীন্স সৌদিয়া ই ভালো হবে। তবে মজার ব্যাপার হলো চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা যেতে বাস এর তুলনায় ট্রেনে সময় কমই লাগে, মাত্র ৩:৩০ মিনিট। বাস এ সময় লাগে ৪:৩০ মিনিট এর মত। যেভাবেই আসুন না কেন কুমিল্লায় এসেই যেটা আপনার চোখে পড়বে তা হলো কিম্ভুত কিমাকার দেখতে একধরনের ব্যাটারিচালিত রিকসা। কুমিল্লায় নাকি এটির সংখ্যা রিকসার তুলনায় বেশী! এবার আপনার শালবন বিহার যাবার পালা।
কিভাবে যাবেন
এখানে আমার একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। কয়েকমাস আগের ঘটনা, তখনো আমি শালবন বিহার দেখিনি। এমন সময় ঢাকা থেকে আমার মামাতো ভাই এসে হাজির এবার তাকে শালবন বিহার দেখাতে নিতে হবে। শেষমেশ অনেক পিড়াপিড়ি তে কুমিল্লার শাসনগাছা বাস স্ট্যান্ড গেলাম। সেখান থেকে সিএনজি ভাড়া করলাম ৩০০ টাকাতে। আমার ভ্রমণ জীবনে এখন পর্যন্ত ঐটাই বড় ভুল! কারন যেখানে মাত্র ৩০ টাকায় একজন শালবন পর্যন্ত যেতে পারে সেখানে আমার খরচ ছিল ৩০০ টাকা। সুতরাং আপনারা সেই ভুল করবেন না। যেখানেই থাকুন না কেন চলে যান টমছম ব্রীজ বাস স্ট্যান্ড এ। সেখানে সিএনজি স্ট্যান্ড পাবেন। লোকালে গেলে লাগবে ১০ টাকা আর যদি রিজার্ভ যেতে চান সর্ব্বোচ্চ ৬০ টাকা। আপনাকে সিএনজি ওয়ালা নামাবে কোটবাড়িতে(শালবন যাবার কথা ড্রাইভার ব্যাটাকে আগে থেকে বলে নিবেন)। সেখান থেকে আবার যেতে হবে অটোরিকসা করে, ঐ ব্যাটা নিবে আবার ৫ টাকা।
দর্শনীয় স্থান ও অন্যান্য
এবার শালবনে পৌছানোর পর বাকি কাজ আর নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না? তবে হ্যাঁ কয়েকটা ব্যাপারে সাবধান/সতর্ক থাকবেন
১। এ মুহূর্তে মনে নেই তবে সপ্তাহে এক/দুই দিন শালবন বিহার সংলগ্ন জাদুঘরটি বন্ধ থাকবে।
২। শালবন বিহারের পাশে কিছু খাবার দোকান আছে। কিছু খাবার আগে খাদ্যের বা পণ্যের দাম জেনে নিতে ভুলবেন না যেন।
৩। ক্যামেরা নিয়ে যেতে ভুলবেন না। তবে চোর হইতে সাবধান।
৪। যে কোন দর্শণীয় স্থান পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব আপনার। এ ব্যাপারে সচেতন থাকবেন।
আপনার ভ্রমণ আনন্দের হোক এই প্রত্যাশায় আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। আগামীতে কুমিল্লার আরো কয়েকটি বিখ্যাত স্থানে আপনাদের ঘুরিয়ে নিয়ে আসতে পারবো আশা রাখি।
-
Blogger Comment
-
Facebook Comment
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
Pages
copyright by@ muntasironline. Blogger দ্বারা পরিচালিত.
0 মন্তব্য(গুলি) :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন